
আলেমদের সমালোচনা: কবর থেকে লাশ তুলে পোড়ানো ইসলামে হারাম
বাংলাদেশে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে ফেলেছে তৈহিদি জনতা। প্রথমে তো সাধারণ মানুষ এই তৌহিদি জনতাকে সাপোর্ট করছিলো। কারণ এই নুরা পাগল নিজেকে ইমাম মাহাদি দাবি করেছিলেন। অনেকবার কোরআন সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। সাথে তিনি মারা যাবার আগে নিজেই কাবা শরিফের আদলে তার খবর তৈরি করেছিলেন। ফলে সেখানে তার কবর পুজা শুরু হয়।
কিন্তু এবার ধীরে ধীরে অবস্থা উল্টো দিকে মোড় নিয়েছে। যারা এই কাজ করেছে তাদের ধিক্কার জানাচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের বিখ্যাত সব আলেমেরা। তারা এবার বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তাদের মতে যারা এই কাজ করেছে তাদের তওবা করা উচিত। ইসলামে কোনো ব্যক্তির লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে ফেলা কোনোদিনই সমর্থন করে না। তারপরেও সেটি ৩০৪০ বছরের পুরনো।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের নেতা তাহেরী হুজুর বলেন, এসব হায়নাদের থেকে মৃত ব্যক্তিও নিরাপদ নয়। সাথে জামায়াতে ইসলামী দলের অফিসিয়াল বক্তব্য একই। তারাও একে সাপোর্ট করে না। এভাবে দেশে দাঙ্গা বেধে যাবে বলে তারা আসঙ্গা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে এবিষয়ে মুখ খুললেন, বহুল আলোচিত ইসলামী স্কলার মুস্তাফিজ রাহমানি। তিনি বলেন, আপনারা দেশে এগুলো কি শুরু করলেন। একজন মানুষের লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিলেন। ইসলামে কি এর অনুমতি আছে।
আপনাদের কি বাহাদুরি, একজন মানুষের লাশ কবর থেকে তুলে রাস্তায় থুয়ে পুড়িয়ে দিলেন। হোক সে যতই খারাপ। এমনকি সে যদি অমুসলিম হন তাহলেও এমনটি করবার অনুমতি ইসলাম দেয়না। ইসলাম শান্তির ধর্ম কিন্তু আপনারা যা শুরু করেছেন। এথেকে বিশ্বে বাংলাদেশের মুসলমানদের সম্পর্কে কি বার্তা যাবে। এমন করলে তো তারা আমাদের উগ্র জঙ্গি ভাববে। ইসলামে কি এর অনুমতি আছে। এই ইসলাম আপনারা কোথায় পেলেন***
কিন্তু সব ইসলামী বক্তাই বলেছেন মাজার পুঁজা শিরক। মাজার পুজা কখনোও ইসলাম সমর্থন করে না। কিন্তু কারো লাশ যেটা কিনা ৩০,৪০ বছর পুরানো। সেই লাশ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া কোনোমতেই উচিত হয়নি।
এদিকে এবিষয়ে গোলাম রাব্বানীর বক্তব্য সামনে এসেছে। তিনি বলেন, আবেগ থাকা ভালো এত আবেগ কিন্তু ভালো না। তিনি আরো বলেন, কবর থেকে লাশ তুলে পুড়ালো ওরা, সবাই বলুন নাউজুবিল্লাহ।

এবার বলি আসল ঘটনা সম্পর্কে । আসলে ইসলামে মাজার পুজা হারাম বা নিষিদ্ধ। এটি শিরক। সাথে নুরাল পাগলার, কুরআন সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য,নিজেকে ইমাম মাহাদি দাবি করা, জীবত থাকতে নিজেই কাবার আদলে নিজের কবর তৈরি করা ** এসব বিভিন্ন কারণে শুক্রবার জুমআর নামাজের পর মুসল্লিরা একজায়গায় হয়ে ঠিক করেন। আজ মাজারের শেষ দেখেই ছাড়বো।
তারা ভেবেছিলো যদি মাজার ভেঙে দিই তাহলে কিছুই হবেনা। মাজার পুজারিরা আবারো তৈরি করে ফেলবে। কিন্তু যদি যাকে তারা, পুজা করছে তাকেই তুলে পুড়িয়ে ফেলা যায় তাহলে না থাক বাশ না বাজবে বাঁশি। তারা কিন্তু ভালো উদ্দ্যেশ্য নিয়েই ইসলামের পক্ষ হয়ে কাজ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু এটিই যে উল্টো তাদের নাম খারাপ করবে তা তারা বুঝতে পারিনি।
কিন্তু তারা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। পুলিশ সুপারের গায়ে হাত তুলেছে। ইএনওর ওপর হামলা করেছে। সবচেয়ে বড় কথা, অনেকে বলছে, এই কবর তো আজ থেকে নেই। কেন এতবছর পর এই কাজ করা হলো। এটি হতে পারে মুসলমানদের পশ্চিমাদের কাছে জঙ্গি প্রমাণ করবার একটি নতুন পরিকল্পনা।
প্রথমে তো বাংলাদেশের সাধারণ জনগণও তাদের দিকে ছিলো কিন্তু যতসময় যাচ্ছে ততই তারা জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। বিভিন্ন ইসলামী স্কলার তাদের বিপক্ষে কথা বলছে। দেশের বাইরে এই খবর বাংলাদেশের মুসলমানদের জঙ্গি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।
যাইহোক, ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে যারা এই কাজ করেছে তারা অতিশিগ্রিই জেলের ভাত খাবে।