
হিকমাহ ও মাহফিল, ইউটিউব ও ফেসবুকের বিকল্প? বাংলাদেশে তৈরি হলো জনপ্রিয় সোসিয়াল মিডিয়া সাইট ইউটিউব ও ফেসবুকের বিকল্প অ্যাপ
হিকমাহ ও মাহফিল, ইউটিউব ও ফেসবুকের বিকল্প? বাংলাদেশে তৈরি হলো জনপ্রিয় সোসিয়াল মিডিয়া সাইট ইউটিউব ও ফেসবুকের বিকল্প অ্যাপ। ইউটিউবের বিকল্প অ্যাপটির নাম মাহফিল (mahfil) এবং ফেসবুকের বিকল্প অ্যাপটির নাম হিকমাহ ( hiqmah)। আমি নিজে ব্যবহার করে দেখেছি এবং ব্যবহার করছি। খুবই সুন্দরভাবে কাজ করছে।
পোস্ট করলে অনেক লাইক কমেন্টও আসছে। ইতিমধ্যে গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ দুটি পাওয়া যাচ্ছে। আপনি যদি বাংলাদেশী এবং একজন মুসলিম হন তাহলে আপনার কাছে অনুরোধ করবো, দয়া করে একবার হলেও অ্যাপ দুটি, ডাউনলোড করে ব্যবহার করুন। আপনি ভাবতেও পারবেন না। এই অ্যাপ দুটি সফল হলে কত পরিমাণে বাংলাদেশ ও মুসলিম জনসংখ্যা উপকৃত হবে।
এই অ্যাপ দুটির বিষয়ে কথা বলার আগে একটু বর্তমান বিশ্বে মুসলমানদের অবস্থান সম্পর্কে বলা অতিব জরুরি
আসলে বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির হাব গুলো সব ইহুদি, খ্রিষ্টানদের হাতে। বর্তমানে জনপ্রিয় সব সোসিয়াল মিডিয়া সাইটও তাদের। এজন্য তাদের এসব অ্যাপে আমরা মুসলমানেরা যদি, কোনো ইসলামের বিষয় নিয়ে কথা বলি, বিশেষ করে মুসলমানদের ওপর হওয়া নির্যাতন, হামলা ইত্যাদি সম্পর্কে কথা বলি তাহলে এসব সোসিয়াল মিডিয়া সাইট। আমাদের পোস্টের রিচ কুমিয়ে দেয়, পোস্ট ডিলিট করে দেয়,অথবা মনিটাইজেশন বন্ধ করে দেয়। ফিলিস্তিনের বিষয়ে কথা বলা, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

আমরা কোনো ভাবেই মন খুলে মনের, ভাষা প্রকাশ করতে পারি না। যদি বলতেও হয় ইসরায়েলের নাম নেবার সময় ওই দেশ,এভাবে বলতে হয়। কারণ এটি তো তাদেরই প্লাটফর্ম। তাদের বিপক্ষে কথা বললে তো, তারা ডিলিট করবেই। তাই বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মুসলিমদের জন্য একটি আলাদা সোসিয়াল মিডিয়া সাইট তৈরি করা। যেখানে আমরা মন খুলে ফিলিস্তিন সম্পর্কে কথা বলতে পারবো।
তাছাড়াও এসব সোসিয়াল মিডিয়া, একজন মুমিন ব্যক্তি ব্যবহার করতে ভয় পায়। কারণ কখন অশ্লিল ভিডিও বা ছবি চলে আসে। গিবত,জুয়া,মদ, নারী ইত্যাদি তো আছেই। তাই একজন প্রকৃত মুমিন ব্যক্তির জন্য এসব সোসিয়াল মিডিয়া সাইট ব্যবহার করা খুবই বিব্রতকর বিষয় হয়ে যায়। হিকমাহ ও মাহফিল, ইউটিউব ও ফেসবুকের বিকল্প?
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বর্তমানে অনেক মুসলমান এসব সোসিয়াল মিডিয়া সাইটে,তাদের ক্যারিয়ার তৈরি করছে। কিন্তু মনিটাইজেশন করে টাকা আয় করবেন তাও বলতে গেলে হারাম। কারণ যেসব অ্যাডগুলো দেখিয়ে টাকা আয় হয়।
রাজধানীতে বিরল প্রজাতির চাঁদাবাজ!
সেখানে বিভিন্ন জুয়া, বেপর্দা নারী, মদ সহ নানা ইসলামে নিষিদ্ধ বিষয় প্রোমোট করে, টাকা আয় করতে হয়। যা ইসলাম অনুযায়ী হারাম। কিন্তু হ্যা এখন গুগল অ্যাডসেন্স এমন ফিচারও তুলেছে যেখানে এসব অ্যাডস বন্ধ করা যায়। যেমন আমি ব্যবহার করি আমার ওয়েব সাইটে।
কিন্তু এই ফিচার ব্যবহার করলে আবার টাকা উপার্জনের পরিমাণ খুবই কম হয়ে যায়। তাই আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত যাতে না হয়। তার জন্য অনেক মুসলমান অ্যাডসেন্সে এই ফিচার ব্যবহার করে না। এজন্য হারাম হালাল সব ধরনের এ্যাডস ই চলে।

যদি আমাদের মুসলমানদের একটি এমন সাইট থাকতো যেখানে হালাল অ্যাডস দেখিয়ে টাকা আয় করা যেত। হঠাৎ অশ্লিল ছবি বা ভিডিও না দেখতে হত, মুসলমানদের নিয়ে মন খুলে কথা বলা যেত, ফিলিস্তিনের হয়ে প্রতিবাদ করা যেত নির্দিধায় তাহলে কতও না ভালো হত।
আর এমন কাজই করেছে বাংলাদেশের কিছু তরুণ উদ্দোক্তা। একেবারেই ইউটিউব ও ফেসবুকে স্বাদ পাবেন এই বাংলাদেশের তৈরি দুটি অ্যাপ ব্যবহার করলে। এর এটা আমাদের বাংলাদেশের তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তির প্রমাণ করে। আমরা শুধু ধর্মীয় শিক্ষায় নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞান আর টেকনোলজিতেও এগিয়ে যাচ্ছি!
চলুন এই দুটি অ্যাপ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানায় আপনাদের।
প্রথমে আসি হিকমাহ-এর কথায়। এটা আমাদের দেশের তৈরি একটা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ, ফেসবুকের বিকল্প। কিন্তু এটা শুধু চ্যাট বা পোস্ট শেয়ারের জন্য নয়। হিকমাহ ফোকাস করেছে আমাদের গোপনীয়তা আর নৈতিক কনটেন্টের উপর।
এখানে তুমি নিরাপদে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারো, ইসলামিক মূল্যবোধ ধরে রেখে। আমাদের তরুণ ডেভেলপাররা এমন একটা প্ল্যাটফর্ম বানিয়েছে, যেটা বিশ্বের যেকোনো অ্যাপের সঙ্গে টেক্কা দিতে পারে। তাই এখন সময় এসেছে নিজেদের পায়ে দাড়ানোর। নিজেদের সোসিয়াল মিডিয়া সাইট ব্যবহার করা।

এবার আসি মাহফিলের কথায়। এটা ইউটিউবের মতো একটা ভিডিও-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম, কিন্তু ১০০% হালাল! এখানে তুমি পাবে ইসলামিক বক্তৃতা, নাশিদ, আর পরিবার-বান্ধব কনটেন্ট। শুধু তাই নয়, মাহফিলে আছে নামাজের সময়ের রিমাইন্ডার আর যাচাইকৃত বক্তাদের কনটেন্ট। এটা আমাদের তরুণদের আরেকটা জয়, যারা প্রমাণ করেছে যে আমরা টেকনোলজি দিয়ে আধ্যাত্মিকতা ছড়াতে পারি।
যাইহোক, অ্যাপ দুটি বাংলাদেশের মানুষ তৈরি করলেও আরবিতে নাম দিয়েছে। অবশ্য সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু বাংলা নাম দিলে আরো ভালো হত। বাংলাদেশীদের আরো গর্ব বেড়ে যেত। কিন্তু এই অ্যাপ দুটি যেহেতু মুসলমানদের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি, তায় হয়তো তারা আরবিতে নাম দিয়েছে।
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান:৫৪ বছর পর কে এগিয়ে?
বন্ধুরা, হিকমাহ আর মাহফিল শুধু অ্যাপ নয়, এটা আমাদের সম্ভাবনার প্রতীক। অনেকে ভাবে মুসলিম দেশগুলো শুধু ধর্মীয় শিক্ষায় ফোকাস করে, আর জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু এই অ্যাপগুলো প্রমাণ করছে, আমরা ধর্ম আর বিজ্ঞানের সমন্বয় করতে পারি। আমাদের তরুণরা টেকনোলজি তৈরি করছে, যেটা আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে মানানসই। এটা একটা টেক বিপ্লবের শুরু!
এখন আমাদের দায়িত্ব কী? প্রথমত, হিকমাহ আর মাহফিল ডাউনলোড করে ব্যবহার করো। এগুলো আমাদের তরুণদের স্বপ্ন। দ্বিতীয়ত, এই গল্প সবাইকে শেয়ার করো। আমার Hridoy Observer ওয়েবসাইট আর চ্যানেলে এসো, যেখানে আমি এমন আরো গল্প ও মুসলিমদের ওপর হওয়া নির্যাতন ও মুসলমিমদের অর্জন সম্পর্কে বিভিন্ন নিউজ শেয়ার করবো।
আর সবচেয়ে বড় কথা, আমরা সবাই মিলে জ্ঞান-বিজ্ঞান আর টেকনোলজির পথে এগিয়ে যাই, আমাদের মূল্যবোধ ধরে রেখে। আমরা পারব, ইনশাআল্লাহ!